1. mamunmozumder477@gmail.com : Reporter : Reporter
  2. admin@jonotarbiplob24.com : admin@ :
  3. jonotarbiplob24@gmail.com : admin24 :
       
November 17, 2025, 6:55 pm
শিরোনাম :
ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকীর আলোচনা সভায় বক্তারা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর রাজনৈতিক দর্শন বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে অনেক বেশি প্রাসঙ্গীক প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ জানালেন ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হাই মাটি – মা প্রফেসর ডক্টর সন্দীপক মল্লিক সাহিত্য রসগ্রহণ অনুষ্ঠানে নতুনতারা প্রতিষ্ঠাতা সংবর্ধিত ট্রাভেল এজেন্সির প্রস্তাবিত খসড়া অধ্যাদেশ-২০২৫ বাতিলের দাবি, আটাব, বায়রা ও হাবের “মানুষ বাঁচে তার কর্মের মাধ্যমে” খুলনা আর্ট একাডেমিতে চিত্রশিল্পী মহানন্দ গাইনের ৩১তম জন্মদিন পালন  জুলাই জাতীয় সনদের আদেশ জারি, গণভোটসহ ৫ দফা দাবিতে রাজধানীতে ৮ দলের যৌথ সমাবেশ অনুষ্ঠিত খুলনা আর্ট একাডেমির শিশু শিল্পী স্নেহা হালদার রাই এর জন্মদিন উদযাপন ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর উপলক্ষে এ্যাবের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত খুলনা আর্ট একাডেমির প্রাক্তন ছাত্র প্রসেনজিৎ ঘোষকে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ায় শিশু শিল্পীদের ফুলেল শুভেচ্ছা

টোকাই থেকে কূটনৈতিক পাড়ায়: “টোকাই সোহানুর”র রঙিন সাম্রাজ্য

  • Update Time : Tuesday, November 4, 2025
  • 153 Time View

নিজস্ব অনুসন্ধান প্রতিবেদন |

ভিকটিমবাদের অভিনয়, বিদেশি ফান্ডের দৌরাত্ম্য ও তরুণদের আস্থাহীনতার গল্প

বাংলাদেশের জলবায়ু আন্দোলন একসময় ছিল আশা, প্রতিবাদ আর ন্যায়বোধের প্রতীক। কিন্তু সময়ের সঙ্গে এক নতুন শ্রেণির উত্থান হয়েছে যারা “বঞ্চনা”, “তরুণ নেতৃত্ব” ও “জলবায়ু ন্যায়বিচার”-এর বুলি মুখে নিয়ে, আসলে তহবিল, প্রভাব ও কূটনৈতিক দাওয়াতের খেলায় মেতেছে।

এই শ্রেণির প্রতীক হয়ে উঠেছে “টোকাই সোহানুর” এক নাম, এক চরিত্র, এক প্রতীক, যার মাধ্যমে বোঝা যায় কিভাবে “ভিকটিমবাদের” গল্প এখন একধরনের ব্যবসায় পরিণত হয়েছে।

টোকাই সোহানুরের উত্থান: রাস্তায় নয়, রিসেপশনে

‘সোহানুর’ এক সময় ছোট একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনে কাজ করত প্রকল্পের ব্যানার টানত, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নামে ঘোরাঘুরি করতো, এর মধ্যে আবার বেশ কিছু আন্তর্জাতিক সংস্থা তাদের লোকাল ভিকটিম দেখানোর জন্য এই টোকাইকে ব্যবহার করত, অনুষ্ঠানে চা-নাস্তা পরিবেশন করত, অতিথিদের নাম্বার সংগ্রহ করত। এইতো ভাই যখন যার কাছে যায় তখন তারই হয় সলিমুল হক থেকে শুরু করে বর্তমানে আইনের নিষাদ সবার নামই তার মুখে থাকে, প্রত্যেকেই তাকে চিনে একজন ভিকটিম হিসেবে। ভিকটিম প্লাটুন নিয়ে যদি কোন সিনেমা করা হয় সেক্ষেত্রে এই টোকাই সোহানুর নাম আসবে এক নম্বরে। ভিকটিং হওয়ার জন্য তারা যা যা করা প্রয়োজন সবকিছুই সে করে এমনকি trans gandar ইস্যুতেও স্বরূপ ছিল এই টোকাই। টোকাই আসলে কার এটা বলাটাই মুশকিল। টোকাই সেই রং বদল করা সাপের মত যখন যেখানে যায় সেখানকার রং ধারণ করে এই হচ্ছে টোকাই এর মূল মন্ত্র। সেখান থেকেই শুরু তার শেখা: “গল্পই টাকা, কান্নাই মূলধন।”

ধীরে ধীরে সে বুঝে ফেলে নিজের অভিজ্ঞতাকে “জলবায়ু ভিকটিম গল্পে” রূপান্তর করলেই বিদেশি মঞ্চে করতালি পাওয়া যায়। এমনকি টোকাই যখন ছবি চলে হাটে চলে সব কিছুর মধ্যেই সে একটা ভিকটিম প্রেরল করে যা বাংলাদেশের তথাকথিত কিছু প্রতিষ্ঠিত ভিক্ষুকের শামিল। ভিক্ষাবৃত্তি কে পেশা হিসেবে তারা নিয়েছে আর এই টোকাই জলবায়ুকে তার ভিক্ষার হাতিয়ার হিসেবে নিয়ে নিয়েছে। মঞ্চে দাঁড়িয়ে এই টোকাই বলে, “আমি জলবায়ুর ক্ষতিগ্রস্ত সন্তান।” আর ঠিক সেই মুহূর্তেই মুগ্ধ দাতা সংস্থা, বিস্মিত মিডিয়া, আর পরের সপ্তাহেই বিদেশ সফর।

টোকাই সোহানুর মতো চরিত্রদের এখন দেখা যায় আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে, পাঁচতারা হোটেলের লবিতে, কিংবা কূটনৈতিক অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে।
টোকাই গিরি না করলে কূটনৈতিক পাড়ার খাওয়া-দাওয়া পেটে ঢোকে না এমনটাই এখন প্রবাদে পরিণত হয়েছে তরুণ মেধাবী জলবায়ু কর্মীদের মধ্যে।

বাংলাদেশে জলবায়ু তহবিলের মোট পরিমাণ প্রতিবছর বাড়ছে, কিন্তু মাঠের প্রভাব ততটা দৃশ্যমান নয়। কিন্তু এই টোকাইয়ের ইনকাম বেড়েই চলেছে, এর একটি বড় কারণ হলো— “ভিকটিম ব্র্যান্ডিং” ব্যবসা।

টোকাই সোহানুর মতো নেতারা বিদেশি প্রজেক্টের নাম ব্যবহার করে গড়ে তুলেছে নিজেদের ব্যক্তিগত নেটওয়ার্ক।

তাদের সংস্থা নামমাত্র কার্যক্রম দেখায় কোনো ট্রেনিং, কোনো পোস্টার, কিছু সোশ্যাল মিডিয়া ছবি— তারপর জমা দেয় ৫০ পৃষ্ঠার রিপোর্ট। অভ্যন্তরীণ সূত্র বলছে, এই টোকাই তার অধিকাংশ তহবিলের অর্থ খরচ করে ভ্রমণ, মিটিং ও “ডকুমেন্টেশন”-এর নামে।

টোকাই শাহানুরের প্রতিষ্ঠানে বিগত সময়ে কাজ করেছে এমন এক প্রাক্তন কর্মী জানান “আমরা মাঠে কাজ চাইতাম, কিন্তু অফিস বলত ‘ছবি তোলো, রিপোর্ট দাও।’ বাস্তব কাজের চেয়ে ছবি আর গল্পই বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল।”

শুধু তাই নয় জুলাই আন্দোলনে এই টোকাই নিজেকে জোলাই জোরদা হিসেবে দাবি করেছে এবং এখানে সে তার নেটওয়ার্কের কাজ করেছে এমন একজন কে ভিকটিম করে প্রত্যেকটা জায়গায় সে প্রতিষ্ঠিত করেছে সে জুলাই আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা।

টোকাই রাজনীতি: ভয়, অনুগত্য ও নেটওয়ার্ক

টোকাই সোহানুদের আরেকটি বড় অস্ত্র হলো ভয়।
যে কেউ তার সমালোচনা করে, তার বিরুদ্ধে শুরু হয় সোশ্যাল মিডিয়া হামলা।
তরুণ কর্মীরা বলেন, “যদি কারও নাম বিদেশি সংস্থায় পৌঁছে যায়, হাবলুরা সেই ব্যক্তিকে ‘অবিশ্বস্ত’ বানিয়ে দেয়।”

এভাবে তৈরি হয়েছে এক অদৃশ্য আতঙ্ক যেখানে যোগ্যতা নয়, আনুগত্যই হলো উন্নতির মূল চাবি।
হাবলুদের ঘনিষ্ঠরা ফেলোশিপ, বিদেশ সফর, প্রজেক্ট ফান্ড পায়; আর যারা প্রশ্ন তোলে, তারা হারিয়ে যায় তালিকা থেকে।

কূটনৈতিক পরিমণ্ডলে টোকাই সোহানুরবাদ

জলবায়ু আন্দোলনের আড়ালে এখন চলছে নীরব “কূটনৈতিক দৌড়।”
হাবলুদের নেটওয়ার্কে বিদেশি দূতাবাস, উন্নয়ন সংস্থা, ও আন্তর্জাতিক জলবায়ু ফোরামের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।
তারা নিজেরাই “বাংলাদেশের প্রতিনিধি” পরিচয়ে আন্তর্জাতিক আলোচনায় অংশ নেয়, যদিও সরকারের কোনো অনুমোদন নেই।

এক কূটনৈতিক সূত্র মন্তব্য করে “তারা নিজেদের উপস্থাপন করে যেন রাষ্ট্রের মুখপাত্র। কিন্তু বাস্তবে তারা কেবল দাতাদের পছন্দমতো গল্প বিক্রি করে।”

তরুণদের আস্থাহীনতা ও আন্দোলনের ক্ষয়

যেখানে একসময় তরুণরা পরিবেশ ন্যায়ের জন্য মাঠে কাজ করত, এখন তারা “কনফারেন্স” বা “ভিসা স্পনসরশিপ” নিয়েই ব্যস্ত।
টোকাই সোহানুরের আধিপত্যে তরুণদের অনেকেই হতাশ, কেউ কেউ পুরো খাত ছেড়ে দিয়েছে।
এখন জলবায়ু আন্দোলনের আসল প্রশ্নগুলো জমি, নদী, কৃষক হারিয়ে গেছে “সেলফি ও সেশনের” পেছনে।

এক তরুণ কর্মীর ভাষায় “এখন আর মাঠে যেতে হয় না, বরং মঞ্চে উঠলেই কাজ হয়। সোহানুর এই খেলায় আমরা সবাই কেবল দর্শক।”

বিশ্লেষণ: সোহানুর আসলে কী?

“সোহানুরবাদ” এক ধরনের মানসিকতা —
যেখানে দারিদ্র্যকে পুঁজি, ভিকটিমবোধকে কৌশল, আর তহবিলকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
এরা না রাজনীতি, না সিভিল সোসাইটি বরং দুইয়ের মাঝামাঝি এক অদ্ভুত দুনিয়া, যেখানে দুঃখই ডলারে পরিণত হয়।

শেষকথা: মুখোশের আড়ালের বাস্তবতা

টোকাই সোহানুর কোনো একক ব্যক্তি নয়;
সে একটি চেতনা—এক ধরনের লোভ, ভণ্ডামি ও প্রভাবের রাজনীতি, যা তরুণদের আদর্শকে ধীরে ধীরে গ্রাস করছে।

যতদিন পর্যন্ত এই সোহানুর চিহ্নিত করে প্রতিরোধ গড়ে না তোলা যায়, ততদিন বাংলাদেশের জলবায়ু আন্দোলন “মাঠে” নয়, থাকবে কূটনৈতিক ডিনার টেবিলের গন্ডিতে। এদের সকলকে এখনই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে না হলে বাংলাদেশের তরুণ সমাজ অন্ধকারে নিমজ্জিত হতে বাধ্য হবে যা বাংলাদেশ বিনির্মাণে এবং পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশের তরুণদের অস্তিত্বের হুমকিস্বরূপ।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved
Designed By Barishal Host